Bangla blogs

আইসিসে যোগ দেওয়া শামিমা

হবে, তা শামিমা এবং শামিমার শুভাকাংখী যারা আছে, তারা বুঝবে। কেউ কেউ বলে এভাবে সন্ত্রাসীদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হলে ওদের ক্ষোভ প্রচণ্ড আকার ধারণ করবে, আগুন আরো জ্বলবে, সন্ত্রাস আরও বাড়বে। কিন্তু অন্যরা কী শিখবে যদি সন্ত্রাসীদের ফিরিয়ে নেওয়া হয়? শিখবে সন্ত্রাসী হওয়ার পরও আরাম আয়েশ বাতিল হয় না। সমস্যায় পড়লে দিব্যি সভ্য দুনিয়ায় ফেরত আসা যায়। দক্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে ইউরোপ-আমেরিকায় সন্ত্রাস করার সুযোগও মেলে।

শামিমা যুক্তরাজ্যে ফিরে গেলে, আমার ভয় হয়, সে হয়তো বোরখার আড়ালে বোমা নিয়ে ভিড়ের রাস্তায় বা মেট্রো রেলে যাবে অমুসলিমদের খুন করতে। মগজধোলাই খুব সাংঘাতিক ক্ষতিকর জিনিস। ধোলাই হওয়া মগজকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব। খুব দ্রুত মানুষ নরমপন্থা থেকে চরমপন্থায় চলে যেতে পারে, কিন্তু চরমপন্থা থেকে নরমপন্থায় আসা কারও জন্য সহজ নয়। তাহলে কি চরম ডানপন্থীদের মতো বলবো, সন্ত্রাসীদের বা জিহাদিদের মেরে ফেলো?না, তা বলবো না। সকলেরই বেঁচে থাকার অধিকার আছে। আমি বরং চাইছি শামিমা তার আদর্শে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিশ্বাস করতে চাইলে করুক। তবে বিধর্মীদের প্রতি তীব্র ঘৃণা নিয়ে বিধর্মীদের দেশ যুক্তরাজ্যে যাওয়াটা নিরাপদ নয়। এমনকী যুক্তরাজ্যের জেলও শামিমার জন্য নিরাপদ নয়। বিধর্মীদের প্রতি তার মনোভাব যেহেতু জানাজানি হয়ে গেছে, অধিকাংশ বিধর্মীই তাকে অবিশ্বাস করবে, ঘৃণা করবে, এমনকী তাকে ভয়ও পাবে। এসব শামিমাকে প্রতিশোধপরায়ণ করে তুলবে আরও, সে আরও বড় সন্ত্রাসী হয়ে উঠবে। এটা তার জন্য তো ভালো নয়ই, যুক্তরাজ্যের জন্যও ভালো নয়। জিহাদিদের নিজের প্রতি যেমন কোনও মায়া থাকে না, অন্যের প্রতিও থাকে না। কচি কচি তরুণেরা হলি আর্টিজান ক্যাফেতে কী ঠান্ডা মাথায় মানুষের গলা কেটেছে! ওরা কি আগে কখনও মানুষের গলা কেটে হাত পাকিয়েছে? মগজধোলাই সব করিয়ে নিতে পারে, অন্যকে খুন, স্বজন বন্ধুকে খুন, নিজেকে খুন, সব।

শামিমা এবং আরও যারা আইসিস জংগি রাষ্ট্রহীন অবস্থায় ইরাকে বা সিরিয়ায় পড়ে আছে, যারা ইউরোপ আমেরিকার নাগরিকত্ব হারিয়েছে বা হারাতে যাচ্ছে, ইউরোপ বা আমেরিকায় নয়, তাদের চেষ্টা করতে হবে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশে বাস করার, বিশেষ করে যেসব দেশে শরিয়া আইন বলবত আছে। ওসব দেশেই তারা মনের শান্তি সুখ সব পাবে। বোরখা পরে চলাফেরা করলে ওসব দেশে কেউ টিপ্পনি কাটবে না। ইউরোপের মতো বোরখা নিষিদ্ধ করার আইন জারি হবে না। আর আইসিস পুরুষেরাও নবীজির মতো পোশাক পরে রাস্তা ঘাটে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াতে পারবে।কেউ তাদের সন্ত্রাসী ভেবে হামলা করবে না। মুসলিম সমাজের পরিবেশে ওরা সহজে মিশে যেতে পারবে। তাই সকলে মিলে ওদের ইউরোপ আমেরিকায় ফেরত পাঠানোর পরিবর্তে শরিয়া আইনের দেশে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button